শবে কদর
শবে কদর

আসসালামুআলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ। পৃথিবীর মানুষদের জন্য আল্লাহ তায়ালার তরফ থেকে সর্বশ্রেষ্ঠ নেয়ামতের একটি রাত্রি হচ্ছে শবে কদর। হাজার মাসের চেয়েও উত্তম এই রাত্রিতে এবাদত করতে পারলে পুরো জীবন ভরা এবাদত করার চেয়েও বেশি সওয়াব পাওয়া যাবে। শুধুমাত্র ওই রাতের ফজিলত এর কারণে। প্রিয় দর্শক, আজকে শবে কদর তথা লাইলাতুল কদর চিনার কিছু উপায় জেনে নিবো ইনশাল্লাহ। সকালে হাল্কা আলোক রশ্নিসহ সূর্যোদয় হবে যা হবে পূর্ণিমার চাঁদের মত। ঐ রাতে বৃষ্টি বর্ষণ হতে পারে। কোন ঈমানদার ব্যক্তি কে আল্লাহ স্বপ্নে হয় তোবা জানিও দিতে পারেন যে, আজকে শবে কদরের রাতের এমন টাও হতে পারে। সে রাতে ইবাদত করে মানুষ অপেক্ষাকৃত অধিক তৃপ্তি বোধ করবে। আপনি নিজে এসে তাহাজ্জতের বিছানাই দারালে চোখ দিয়ে পানি বের হবে। অন্তরের মধ্যে আল্লাহ তায়ালার তরফ থেকে এক অসাধারণ অনুভূতি আপনাকে প্রদান করা হবে। সুবাহানাল্লাহ। সে রাতে শু-শীতল বাতাস বইতে থাকবে যেন জান্নাতের দরজা খুলে দেয়া হয়েছে। সুবাহানাল্লাহ। নাতিশীতোষ্ণ হবে অর্থাৎ গরম শীতের তীব্রতা থাকবে না। রাত্রি গভীর অন্ধকারে ছেয়ে যাবে না। সর্বশেষ আরেকটি আলামত হলো, মহিমান্বিত রজনীতে স্থানান্তরশিল। অর্থাৎ প্রতি বছর একই তারিখে বা রজনীতে হবে এমন কিন্তু নয়। শুধুমাত্র ২৭ তারিখ রাত্রে আসবে তা নির্ধারিত নয়। আল্লাহর হেকমত বা তার ইচ্ছায়, কোন বছর তা ২১ তারিখে আসতে পারে। কোন বছরে ২৩ তারিখে আসতে পারে। কোন বছরে ২৫ তারিখে আবার কোন বছর ২৯ তারিখ হয়ে থাকে। প্রিয় দর্শক রমজানের ২৭শে রজনী লাইলাতুল কদর হওয়ার সম্ভাবনা বেশি বলা হয়েছে। কিন্তু, হাদিসে আছেঃ উবাই ইবনে কাব রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু হতে বর্ণিত তিনি বলেন যে আল্লাহর শপথ করে বলছি আমি যতদূর জানি রাসুল (সাঃ) আমাদেরকে যে রজনীতে কদরের রাত হিসেবে কিয়ামুল লাইল করতেন দিয়েছেন তা হলো রমজানের ২৭ তম রাত সহি মুসলিম। হযরত আব্দুল্লাহ বিন ওমর থেকে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ সাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি কদরের রাত অর্জন করতে ইচ্ছুক সে জেনো তা রমজানের ২৭ তম রজনীতে অনুসন্ধান করে। কিন্তু অধিকাংশ মুফাচ্ছির কেরাম গন মতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাম গুরুত্ব দিয়েছেন প্রত্যেকটি বেজোড় রাত্রিতে। এমনকি রমজানের শেষ দশকে মসজিদে অবস্থান করে এত্তেকাফের মাধ্যমে শবে কদরের খোজার মাধ্যমে। এ রাত শেষ দশকে হওয়ার সম্ভাবনা বেশি বলেছেন। রাসূল সাল্লাহু সাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি লাইলাতুল কদর অনুসরণ করতে চায়। সেজন্য রমজানের শেষ ১০ রাতের মধ্যেই তা অনুসরণ করে। অন্য হাদিসে আছে বেজোড় রাত্রি গুলো অনুসরণ করে। এটি রমজান মাসে বেজোড় রাতে হওয়ার সম্ভাবনা বেশি হওয়াতে রাসূল (সাঃ) শেষ ১০ দিনে আমাদের কে মসজিদে এতেকাফ এর মাধ্যমে এ রাত্রির মর্যাদা তথা আল্লাহ্‌ তরফ থেকে দেওয়া অগণিত নিয়ামত গ্রহণ করার একটি চমৎকার রাস্তা দিয়ে দিয়েছন। সুবহানআল্লাহ। এ রাত্রি রমজান মাসের শেষ দশকের তাই প্রত্যেকটি ঈমানদার মুসলমানের উচিত রমজানের শেষ ১০ দিনের কোন রাত্রি যেনো আমাদের মিস না হয় সেদিকে খেয়াল রাখা প্রিয় দর্শক একটা বিষয় মাথায় রাখতে হবে যেহেতু আমাদের দেশ এবং সৌদি আরবের জোড় বেজোড় রাত্রিতে কিছুটা ঘাপলা আছে। বিশেষ করে আমাদের দেশে যেটা বেজোড় রাত্রি সৌদি আরবের জোড় রাত্রি। আবার আমাদের দেশে যেটা জোড় রাত্রি সৌদি আরবের বেজোড় রাত্রি। তাই আমাদের উচিত হবে ১৯ রমজান থেকে প্রত্যেকটা দিন আমাদের আমলের সাথে থাকা। তাহলে ইনশাআল্লাহ শবে কদর মিস হওয়ার কোন সম্ভাবনা নাই। মনে রাখবেন, এ রাতের ফজিলত ফজর পর্যন্ত জারি থাকবে। তাই ফজরের আগ পর্যন্ত যা আমল করবেন সবকিছু আল্লাহ রব্বুল আলামীনের দরবারে অনেক শ্রেষ্ঠত্বের মর্যাদা পেয়ে যাবেন।

রমজান বরকত ও নাজাতের মাস আর এই মাসে শ্রেষ্ঠ ১০টি রাত হচ্ছে শেষ দশকের ১০ টি রাত। যার ভিতরে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন সকল এবাদত কারির জন্য শ্রেষ্ঠ রজনী লুকিয়ে রেখেছেন। যে রজনী হাজার রাতের চেয়ে উত্তম। এবং সেই রাতেই পবিত্র কুরআন অবতীর্ণ হয়েছে। আল কুরআনে এসেছেঃ রমজান মাস যার মধ্যে কুরআন নাযিল করা হয়েছে। লোকেদের পথপ্রদর্শন হেদায়েতের স্পষ্ট বর্ণনা এবং সত্য-মিথ্যার পার্থক্য কারী। সূরা আল বাকারাঃ ১৮৫। রমজান মাসের শেষ দশকের ফজিলত সম্পর্কে আল্লাহর রাসূল (সাঃ) বলেছেনঃ রমজান বরকতময় মাস। তোমাদের দোয়ারে উপস্থিত হয়েছে। পুরো মাসে রোজা পালন তোমাদের জন্য ফরজ করা হয়েছে। এমাসে জান্নাতের দরজা উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। বন্ধ করে দেয়া হয় জাহান্নামের দরজা গুলো। এবং এ মাসের শেষ দশকের রজনীর মধ্যেই লুকিয়ে আছে শবে কদর। যা হাজার রাতের চেয়ে উত্তম। দুষ্টু শয়তানদের কে এই মাসে শৃংখলাবদ্ধ করে দেওয়া হয়। এর কারণ হচ্ছে এই মাসেই আল্লাহ কর্তৃক প্রদত্ত একটি রাত রয়েছে। যে রাত হাজার মাসের চেয়েও উত্তম। যাতে মানুষ শয়তানের ওয়াস ওয়াসা থেকে মুক্ত থেকে নির বিচ্ছিন্ন ভাবে আল্লাহকে ডাকতে পারে। এবং অবশ্যই যেন মানুষ এই মহিমান্বিত রাতের ইবাদত থেকে বঞ্চিত না হয়। সে জন্য রাসূল (সাঃ) বারববার তাগিদ দিয়েছেন। আসুন প্রিয় দর্শক শেষ দশকের গুরুত্বপূর্ণ যে আমল গুলো রয়েছে সেগুলো নিয়ে আলোচনা করি। যেগুলো পালন করার মাধ্যমে আমরা জান্নাতে যেতে পারি। এবং জাহান্নাম থেকে মুক্তি পেতে পারি। তবে শেষ দশকের এই আমল করার জন্য শর্ত হলো ২ টি। ১. একলাস থাকতে হবে অর্থাৎ একনিষ্ঠতার সঙ্গে কেবল মাত্র আল্লাহ তা’আলার জন্য আমল করতে হবে। সুতরাং যে আমল হবে টাকা উপার্জনের জন্য। নেতৃত্ব অর্জনের জন্য। সুনাম-সুখ্যাতি অর্জনের জন্য। সে আমলে একলাস থাকবে না। অর্থাৎ এসব এবাদত বা নেক আমলের মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জিত হবে না। এমনকি লোকো প্রদর্শন করলেও সেটা আল্লাহ কবুল করবেন না। পবিত্র কুরআনে এসেছেঃ আর তাদের কেবল এই নির্দেশ দেয়া হয়েছিল যে তাঁরা যেন আল্লাহর এবাদত করে। তারই জন্যে দিনকে আকৃষ্ট করে। তাই আমরা এবাদত করব শুধু আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য। ২. শর্তটি হলো এবাদত এর ক্ষেত্রে রাসূল (সাঃ) এর সুন্নাতের অনুসরণ করা। সহি শুদ্ধভাবে আল্লাহর রাসূল (সাঃ) এর যেসব এবাদত এর কথা উল্লেখ করেছেন। সেগুলো পরিপূর্ণ ভাবে অনুসরণ করতে হবে। এক্ষেত্রে কোনো বাড়ানো বা কমানোর সুযোগ নেই। কারণ এবাদত হচ্ছে সেটি যেটি আল্লাহর রাসূল (সাঃ) শিখিয়ে দিয়েছেন। কোরানে এসেছে রাসূল তোমাদের জন্য যা নিয়ে এসেছে তা তোমরা গ্রহণ করো। আর যা থেকে সে তোমাদের নিষেধ করেছে সেটি থেকে বিরত হও। সূরা হাশর আয়াতঃ ৭। এ বিষয়ে রাসূল (সাঃ) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি এমন এবাদত করলো যাতে আমাদের কোনো নির্দেশনা নেই তা পরিত্যাজ্য হিসেবে গণ্য হবে। সহীহ মুসলিম হাদীস নংঃ ৪৫৯০। তো আসুন সর্বপ্রথম যে আমল টি নিয়ে কথা বলব। ১. সেটা হচ্ছে শেষ দশকে আপনার রোজা গুলো কবুলিয়াতের জন্য আল্লাহর কাছে বেশি বেশি প্রার্থনা করুন। বারবার এই রজনীতে একটি বাক্য আল্লাহকে বলি। হে আল্লাহ আপনি আমার রোজা গুলোকে কবুল করুন। কারণ আপনি সুন্নাহ মোতাবেক সিয়াম পালন করা এবং সেটি আল্লাহর কাছে কবুল হওয়া এটা হচ্ছে রমজান মাসের সবচেয়ে বড় সফলতা। কেননা মহান আল্লাহ তো বলেই দিয়েছে। সূরা আল বাকারাঃ ১৮৫ নম্বর আয়াতে। সুতরাং তোমাদের মধ্যে যে এই মাসটিকে পাবে সে যেন তাদের সিয়াম পালন করে। সুতরাং এই শেষ দশকে আপনার প্রধান কাজ হবে আল্লাহ্‌ কাছে আপনার সিয়াম গুলোর ব্যাপারে বেশি বেশি করে প্রার্থনা করা। ২. সময় মতো নামাজ আদায় করা। বছরের বাকি সময় গুলোতে যদি নামাজ নিয়ে কিছুটা শৈথিল্য প্রদর্শন করে থাকেন। তবে এই শেষ দশকে নামাজ গুলো সঠিক সময় আদায় করুন। কোরআন মাজিদে বলা হয়েছেঃ নিশ্চয়ই সালাত মুমিনদের উপর নির্দিষ্ট সময়ের ফরজ। সূরা নিসা আয়াত ১০৩। কোন ভাবেই মসজিদ ব্যতীত ঘরে নামাজ আদায় করবেন না। ৫ ওয়াক্ত সালাত মসজিদে আদায় করেন। এ বিষয়ে আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু বলেন। আমি বললাম হে আল্লাহর নবী কোন আমল জান্নাতের প্রতি নিকট বর্তী। তিনি বললেন সময় মত নামাজ আদায় করা। সহিঃ মুসলিম হাদিস নম্বর ২৩৩। ৩. সহি শুদ্ধভাবে কুরআন শিক্ষা করা। রমজান মাসের শেষ রজনী গুরুত্বপূর্ণ একটি আমল হচ্ছে কুরান বেশি বেশি তিলোয়াত করা। কারণ এই শেষ দশকের একটি রজনী শ্রেষ্ঠ রজনী বলা হয়েছে শুধুমাত্র কুরআনের কারণে। শুধুমাত্র কুরআন এর কারণে এরাত্রি শ্রেষ্ঠ রাত্রি হিসেবে মর্যাদা পেয়েছে। আর তাইতো আপনাকে শেষ দশকের বেশি বেশি কোরআন তেলাওয়াত করতে হবে। রাত্রে একটা সময় কোরআন এর পেছনে দিতে হবে। এজন্য রাসূল (সাঃ) বলেছেনঃ তোমরা কুরআন শিক্ষা করো এবং তেলোয়াত করো। ৪. আপনি কোরান পড়ার পাশাপাশি অন্যকে কোরআন পড়া শেখানো। বিশেষ করে আপনার পরিবারের ছোট সন্তান।আপনার স্ত্রী। এমনকি আপনার পিতা মাতা যদি কোরান পড়তে না জানে। তাহলে আপনার দায়িত্ব হচ্ছে এদের সবাইকে কুরআন শেখানো। এ বিষয়ে আল্লাহর রাসূল (সাঃ) বলেছেনঃ তোমাদের মধ্যে সর্বোত্তম ব্যক্তি সেই যে নিজে কোরান শিক্ষা করেন এবং অপরকে শিক্ষা দেয়। সহি বুখারি হাদিস নাম্বারঃ ৫০২৭। অন্য হাদীসে আছে, যে ব্যক্তি আল্লাহর কিতাব থেকে একটি আয়াত শিক্ষা দেবে ঐ আয়াত শিক্ষা নেওয়া ব্যক্তি যত তেলোয়াত হবে তার সওয়াব শেখানো ব্যাক্তি পাবে। ৫. শেষ দশকের আমল টি হলো সেহরি খাওয়া। এখন অনেকেই বলতে পারেন সেহরি তো পুরো রমজান মাসে খেয়েছি। হাদীসে এসেছে সেহেরি বরকতময় খাবার। তাই কখনো সেহরি খাওয়া বাদ দিবেন না। একঢক পানি পান করলেও সেহরি খাওয়া হয়ে যায়। এছাড়াও আল্লাহর রাসূল (সাঃ) যে প্রক্রিয়ায় সেহরি খেয়েছেন। সে প্রক্রিয়ায় আপনারা সেহরি খেয়ে সেহেরির সুন্নত গুলো আদায় করার ব্যাপারে গুরুত্ব দিবেন। যেহেতু সেহরি খাওয়ার আমলটাও রাতের মধ্যে পড়ে। তাই সঠিক ভাবে সেহরি খেতে পারলে সেটিও কিন্তু সওয়াব কয়েক হাজার গুণ বৃদ্ধি পেয়ে যাবে। ৬. সালাতে তারাবি পরিপূর্ণ ভাবে পড়া। রমযান মাসে শেষ ১০ রজনীতে কোনো ভাবে তারাবির নামাজ কম পড়বেন না বেশি করে করবেন। এবং মনের অন্তরের সাথে পড়বেন। যতটুকুই পরুন না কেন নামাজ গুলো যেন সুন্দর হয়। নামাজের মধ্যে যেন আমার অন্তরাত্মা আল্লাহর স্মরণে কেপে উঠে। এ ছাড়াও রাতের একটি সময় কিয়ামুল লাইল পড়ুন। শেষ রাতে তাহাজ্জত পড়ুন। অল্প ঘুমিয়ে বেশী আমল করার চেষ্টা করুন। ৭. আমল হচ্ছে বেশি বেশি কুরআন তেলাওয়াত করা। আল্লাহর রাসূল বলেন যে ব্যক্তি কুরআনের একটি হরফ পাঠ করে তাকে একটি নেকি প্রদান করা হয়। প্রতিটি নেকি আবার 10 নেকির সমান। সূরা আত। তিরমিজি হাদিস নম্বর ২৯১০। আল্লাহর রাসূল (সাঃ) রমজান মাস ব্যতীত কোন মাসে এত বেশি তেলাওয়াত করতেন না। আয়েশা সিদ্দীকা রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু হতে বর্ণিত তিনি রাসূলুল্লাহ (সাঃ) থেকে বর্ণনা করেন তিনি বলেন আমি রাসূল (সাঃ) কে রমজান ব্যতীত অন্য কোন রাতে এত বেশি কোরআন তেলাওয়াত করতে দেখিনি। আমি তো দেখেছি মাঝে মাঝে তিনি ভোর পর্যন্ত তেলাওয়াত করতে করতে কাটিয়ে দিতেন। সহিঃ মুসলিম হাদিস ১৭৭৩। ৮. শুকরিয়া নামাজ আদায় করা। আপনি পুরো রমজান মাস পেয়েছেন। এটা একটা সৌভাগ্যের বিষয়। তাই শেষ দশকের রাত্রি গুলো সৌভাগ্যের নামাজ আদায় করবেন। সে জন্য আল্লাহ তাআলার দরবারে বেশি বেশি শুকরিয়া আদায় করবেন। এবং আগামী রমজান পাওয়ার তৌফিক কামনা করবেন। রমজান সম্পর্কে কুরআনে বলা হয়েছেঃ আর যাতে তোমরা রোজার সংখ্যা গুলো পূরণ করো এবং তিনি তোমাদেরকে হেদায়েত দিয়েছেন তার জন্য আল্লাহর বরত্ত ঘোষণা করো এবং তোমরা শুকরিয়া আদায় করো। অন্য আয়াতে বলা হয়েছেঃ আর যখন তোমাদের রব ঘোষণা দিলেন। যদি তোমরা শুকরিয়া আদায় করো। তবে আমি অবশ্যই তোমাদের বাড়িয়ে দিব। আর যদি তোমরা অকৃতজ্ঞ হও। নিশ্চয় আমার আযাব বড়ই কঠিন। তাই মাহে রমজানের শেষ দশকে আপনি জীবনে যা কিছু পেয়েছেন যা কিছু হারিয়েছে সবকিছু নিয়ে আল্লাহর দরবারে সন্তুষ্টি আদায় করুন। না শুকরিয়া এবং হতাশা প্রকাশ করবেন না।
হে আল্লাহ আমি এটা পাইনি। ওটা পায়নি এমন টা বলবেন না। হ্যা আপনি আল্লাহর কাছে চাইতে থাকুন। কিন্তু যা কিছুই পেয়েছেন তার জন্য শুকরিয়া আদায় করতে ভুলবেন না। আয়েশা রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু নবী করীম (সাঃ) নেয়ামতের শুকরিয়া আদায় করতে বলতেন। এবং সবসময় বলতেন সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য। আলহামদুলিল্লাহ। ৯. কল্যাণ কর কাজ বেশি বেশি করুন। ধরুন রমজান মাসে আপনি দান করেছেন। পুরো রমজান মাস। কিন্তু শেষ দশকে এসে একটু বেশি বেশি দান করুন। বেশি বেশি নেক কাজ করুন। প্রতিবেশির বাসাই বেশি বেশি খাবার পাঠান। আত্মীয় স্বজনদেরকে দিনের বেলায় বেশি বেশি মেহমান করেন। এমনকি রাতের অন্ধকারেই এই শেষ দশকে এবাদত এর ফাঁকে ফাঁকে চাইলে বের হয়ে অসহায় দুঃস্থ মানুষদের কিছু খাবার অন্য বস্ত্র অর্থ দিয়ে আসতে পারেন। ১০. আমল হলো তাহাজ্জুতের নামাজ পড়তে পড়তে রাত পার করে দেওয়া। শেষ দশকের অন্যতম একটি আমল হচ্ছে এটি। যেহেতু তাহাজ্জতের নামাজ এত গুরুত্বপূর্ণ যে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) টানা ৩ দিন মসজিদে নববীতে তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ার পর একদিন নিজেই ইচ্ছে করে আর নামাযে আসলে না। অতঃপর সাহাবারা জিজ্ঞেস করার পর আল্লাহর রাসূল বললেন আমার ভয় হচ্ছিলো। না জানি আল্লাহ তা’আলা আমার উম্মতের জন্য তাহাজ্জুদ নামাজ ফরজ করে দেয়। কেন না এটা এত বেশি মর্যাদাপূর্ণ। এই নামাজ যদি কোন ভাবে আমার উম্মতের উপর ফরজ হয়ে যায়। এবং আমার উম্মত রা এই নামাজ পড়তে না পারে তাহলে সবাইকে গুনাগার হয়ে যাবে। সুবাহানাল্লাহ। তাই রমজানের শেষ দশকে আপনি কোনো ভাবেই তাহাজ্জুদ নামাজ মিস করবেন না। কেননা রাসূলুল্লাহ (সাঃ) নিজেই বলেছেন ফরজ সালাতের পর সর্বোত্তম সালাত হলো রাতে তাহাজ্জুদ আদায় করা। হে আল্লাহ আপনি আমাদের শবেকদর নসিব করুন। এবং আমাদের নেক আমল দ্বারা আমলনামা কে ভর্তি করার তৌফিক দান করুন। আমিন।

ভালো লাগলে কিন্তু ফেসবুক পেজ এ লাইক দিতে ভুলে জাবেন না।
আরো তথ্য পেতে ভিজিট করুন.