বিস্তারিতঃ
ভবিষ্যতের পৃথিবীর বড় চ্যালেঞ্জ জ্বালানি। জ্বালানি সংকট তীব্র থেকে তীব্রতর হওয়ার আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। এর সমাধান খুঁজে পেতে মরিয়া তারা। নতুন জ্বালানির উৎস খুঁজতে কয়েক দশক মহাকাশে বিভিন্ন ধরনের অভিযান ও গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করছেন তারা। সেই খোজে চোখ পড়েছে চাদের দিকেও। বিভিন্ন দেশের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা চাদে বা অন্যান্য গ্রহ-উপগ্রহে একের পর এক মিশন পরিচালনা করছে। এসব মিশনের পেছনে রয়েছে অর্থনৈতিক উদ্দেশ্য। চাদের জন্য বিনিয়ােগের কারণের মধ্যে সব থেকে আলােচিত কারণ হচ্ছে হিলিয়াম-৩ নামক একটি পদার্থ। এই উপাদানটিকে ধরা হচ্ছে ভবিষ্যতের পৃথিবীর জ্বালানির জোগানদাতা। সে জন্য চঁাদ ও হিলিয়াম-৩ নিয়ে বিভিন্ন মহাকাশ গবেষণা সংস্থার আগ্রহ এখন তুঙ্গে।

সবাই এত বেশি জীবাশ্ম জ্বালানি খরচ করে ফেলেছে, ২০১৫ সালের এক গবেষণায় উঠে এসেছে। খনিজ তেলের মজুদ ৫০ বছর, প্রাকৃতিক গ্যাসের ৫৩ বছর, আর কয়লার মজুদ ১১৪ বছর পর পুরােপুরি শেষ হয়ে যাবে। উন্নত দেশগুলাে স্বাভাবিক ভাবেই তখন পারমাণবিক শক্তির মাধ্যমে উৎপাদিত জ্বালানির দিকে ঝুঁকে যাবে। ধারণা করা হচ্ছে, চাঁদের মাটির নিচে বিদ্যমান হিলিয়াম-৩ নামক উপাদান নিউক্লিয়ার ফিউশনের মাধ্যমে শক্তি তৈরিতে বিপ্লব ঘটাতে পারে। মাত্র ২৫ টন ‘হিলিয়াম-৩’ ব্যবহার করে ফিউশন বিক্রিয়ার মাধ্যমে সমগ্র যুক্তরাষ্ট্রের এক বছরের জ্বালানির চাহিদা পূরণ করা সম্ভব! চাদের মাটিতে এই হিলিয়াম-৩ এর রিজার্ভ আছে ২৪ লাখ ৬৯ হাজার টন।

এই বিশাল পরিমাণ হিলিয়াম-৩ কে কাজে লাগানাে গেলে পৃথিবীর জ্বালানির চাহিদা অনেকাংশেই পূরণ করা সম্ভব। তবে এই মুহূর্তে এমন কোনাে প্রযুক্তি নেই যার মাধ্যমে এই জ্বালানি এনে কাজে লাগানাে যাবে। বিজ্ঞানীরা এ বিষয়ে গবেষণা শুরু করেছেন। চীন এ বিষয়ের গবেষণায় ভালােই এগিয়েছে। চাদ থেকে আনা মাটি ও পাথরের স্যাম্পল তারা ১৩টি প্রতিষ্ঠানকে ভাগ করে দিয়েছে বিভিন্ন বিষয়ে গবেষণার জন্য। আর তাদের এই গবেষণার উদ্দেশ্যই হচ্ছে চাঁদের মাটি থেকে হিলিয়াম-৩ উত্তোলনের সম্ভাব্যতা যাচাই করা। ভারতের চন্দ্রযান-২ মিশনেরও একটা বড় উদ্দেশ্য ছিল হিলিয়াম-৩ এর খোঁজ করা এবং এ নিয়ে গবেষণা করা। কবে পৃথিবী এই নতুন জ্বালানি ব্যবহার শুরু করতে পারবে তা দেখার জন্য অপেক্ষায় থাকতে হবে আরও কিছু বছর।

চাঁদে নিল আর্মস্ট্রংয়ের সেই পায়ের ছাপ আজও অমলিন:
৫০ বছর আগে চাদের মাটিতে প্রথম পা পড়েছিল মানুষের। যিনি আক্ষরিক অর্থেই সেই ঐতিহাসিক পদক্ষেপ করেছিলেন সেই নিল আর্মস্ট্রংয়ের প্রতিক্রিয়া ছিল কালজয়ী। পৃথিবীর একমাত্র উপগ্রহে পায়ের ছাপ ফেলে তিনি বলেন, একজন মানুষের ছােট্ট পদক্ষেপ, মানব জাতির জন্য বিশাল বড় লাফ। সেই পায়ের ছাপ কিন্তু এত গুলাে বছর পরেও বহাল তবিয়তে টিকে আছে। অ্যাপােলাে অভিযানের তিন কাণ্ডারী নিল আর্মস্ট্রং, এডুইন ‘বাজ অলড্রিন এবং মাইকেল কলিন্সই একমাত্র চন্দ্রপৃষ্ঠে পৌঁছেছিলেন।

তিনি চাঁদের মাটিতে নেমে হাঁটাচলা করেছিলেন এবং সেই পায়ের ছাপ আজও বিদ্যমান, এক ভিডিও প্রকাশ করে সে কথা জানাল মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থানাসা। ভিডিওটি তুলেছে নাসার লুনার রেকনেসান্স অরবিটার। নাসা বলছে, চাদে প্রথম পায়ের ছাপ এক মিলিয়ন বছর ধরে থাকবে। তাদের উড়িয়ে দেওয়ার মতাে কোনাে বাতাস নেই।

ভালো লাগলে কিন্তু ফেসবুক পেজ এ লাইক দিতে ভুলে জাবেন না।
আরো তথ্য পেতে ভিজিট করুন.