বিস্তারিতঃ
অনেকেরই ডায়রিয়া হয়। তাই ডায়রিয়া থেকে সতর্ক থাকাটা খুব জরুরি। এমনিতে ডায়রিয়ার জন্য আলাদা কোনো ওষুধের প্রয়োজন হয় না। পানি শূন্যতা রোধের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ তরল জাতীয় খাবার খেলেই ডায়রিয়া সেরে যায়। আর এই ক্ষেত্রে সবচেয়ে কার্যকর পদ্ধ্যতি হচ্ছে খাবার স্যালাইন বা Oral Rehydration Salt (ORS)। বাজারে যে ORS বা স্যালাইন পাওয়া যায় সেটা হলো শরীরের জন্য জরুরি কিছু লবণের শুকনো মিশ্রণ, যেটাকে বিশুদ্ধ পানির সাথে মিশিয়ে খাওয়া লাগে। যেহেতু স্যালাইন শরীরের পানি ও লবণের ঘাটতি পূরণ করে তাই এটি সঠিক পরিমাণে হওয়া খুবই জরুরি। তা না হলে ওরস্যালাইন শরীরে বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি করতে পারে।

Oral Rehydration Salt (ORS) স্যালাইন বানানোর নিয়মঃ
১।
প্রথমে অবশ্যই দুই হাত ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে।
২। স্যালাইন বানানোর পাত্র এবং চামচ ভালো করে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে।
৩। এরপর পাত্রে দুই পোয়া বা আধা লিটার বিশুদ্ধ পানি নিতে হবে। (ফুটানো ঠান্ডা পানি হলে ভালো হয়)।
৪। তাতে প্যাকেটের পুরো মিশ্রণটিই ঢেলে দিন।
৫। পরিষ্কার চামচের সাহায্যে মিশ্রণ ও পানি ভালোভাবে মিশিয়ে নিন।

প্রয়োজন অনুযায়ী ডায়রিয়া ভালো হওয়ার আগ পর্যন্ত খাওয়াতে থাকতে হবে।

সতর্কতাঃ
কোনোভাবেই পানির পরিমাণ কম বেশি করা যাবে না, এক্ষেত্রে কাঙ্ক্ষিত ফলাফল তো পাওয়া যাবেই না, বরং শিশুদের ক্ষেত্রে ক্ষতিও হতে পারে। কোনোভাবেই স্যালাইনে পানি ছাড়া অন্য কিছু যেমন দুধ, স্যুপ বা ফলের জ্যুস বা সফট ড্রিংকসেও মেশানো যাবে না। এমনকি চিনিও মেশানো যাবে না। শিশুদের ক্ষেত্রে স্যালাইন কাপে করে খাওয়ানোই ভালো, কারণ ফিডিং বোতল পুরোপুরি পরিষ্কার করা ঝামেলা হয়ে যায় অনেক সময়। গরম পানিতে স্যালাইন বানানো যাবে না। স্যালাইনের পানিও গরম করা যাবে না। বানানোর পর ১২ ঘণ্টা পর্যন্ত স্যালাইন ভালো থাকে। অর্থাৎ বানানোর ১২ ঘণ্টা পর আর স্যালাইন খাওয়া যাবে না, সেটি ফেলে দিতে হবে।

ORS না পাওয়া গেলে ঘরে যেভাবে বানাবেন স্যালাইনঃ
অনেক সময় জরুরি অবস্থায় স্যালাইন হাতের কাছে না-ও পাওয়া যেতে পারে। সেক্ষেত্রে ঘরেই স্যালাইন প্রস্তুত করে নেওয়া যেতে পারে। শুরু করা যাকঃ

১। চিনি লাগবে।
২। লবণ লাগবে।
৩। পানি লাগবে। (ফুটানো ঠান্ডা পানি হলে ভালো হয়)
৪। পাত্র লাগবে।
৫। চামচ লাগবে।
৬। এখন ছয় টেবিল চামচ চিনি ও আধা টেবিল চামচ লবণ এক লিটার বিশুদ্ধ পানিতে ভালো ভাবে গুলিয়ে নিলেই তৈরি হয়ে যাবে স্যালাইন।

সতর্কতাঃ
স্যালাইন তৈরির সময় উপাদানে কম বেশি করা যাবে না। চিনির পরিমাণ বেশি হয়ে গেলে ডায়রিয়া বেড়ে যেতে পারে, আবার অতিরিক্ত লবণ শিশুর মৃত্যুর কারণও হতে পারে। তবে হাতে বানানো স্যালাইনের ক্ষেত্রে পানি এক লিটারের চাইতে সামান্য বেশি ব্যবহার করলেও সমস্যা নেই। আরেকটা ব্যাপার মাথায় রাখতে হবে, বাজারে অনেক ধরনের ফ্লেভার মিশ্রিত স্যালাইন পাওয়া যায়। তবে ডায়রিয়া রোগীর চিকিৎসায় এসব ফ্লেভার মিশ্রিত স্যালাইন বরং ক্ষতিই বেশি করতে পারে। পর্যাপ্ত তরল খেতে থাকলে, কোনো ওষুধ ছাড়াই তিন থেকে চার দিনের মধ্যে ডায়রিয়া ভালো হয়ে যায়। না হলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

ভালো লাগলে কিন্তু ফেসবুক পেজ এ লাইক দিতে ভুলে জাবেন না।
আরো তথ্য পেতে ভিজিট করুন.