Shaskosto Bidai

Shaskosto Bidai

গল্প হলেও সত্য
আমি সব ওষুধ বন্ধ করে দেই এবং ইয়োগা অনুশীলন করতে থাকি। এক মাসের মধ্যে আমি পুরোপুরি সুস্থ হয়ে যাই। কাজেই ওষুধ, ইনহেলার ও অ্যাজমা বা হাঁপানিকে বিদায় জানাই।

শ্বাসকষ্ট বিদায়…
হাঁপানি বা শ্বাসকষ্ট সে কত কষ্টদায়ক রোগ তা শুধু ভুক্তভোগীই জানেন। কেউ বলেন, এ রোগ দুরারোগ্য আবার আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞান বলে, শ্বাসকষ্ট চিকৎসাযোগ্য এবং সম্পূর্ণ নিরাময় হয়।

এ রোগ নিরাময়ের জন্য হরেক রকম ওষুধ ও কৌশল আবিষ্কৃত হয়েছে। কিন্তু সবাই এ জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ ব্যয় করতে সমর্থ নয়। অনেকে জানে না যে, ওষুধ ছাড়াই শ্বাসকষ্ট ভালো হয়। আজ এমন এক গল্প বলব যা থেকে জানা যাবে কিভাবে ওষুধ ছাড়াই অ্যাজমা বা শ্বাসকষ্ট নিরাময় হয়।

রেজা (কল্পিত নাম) সাহেব বয়ঃবৃদ্ধ ব্যক্তি। তিনি ওষুধ ছাড়াই এই রোগ থেকে মুক্তি পান। তিনি বলেন, আমার বয়স যদিও ৮৫ বছর আমার মানসিক সচেতনতা, শরীরিক শক্তি এই বয়সকে অস্বীকার করে।

২০১৩ সালের কথা। আমি আদালতে দু’টি মামলায় জড়িয়ে পড়ি। ফলে হতাশা ও মানসিক চাপের শিকার হই। উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা এত বেশি বৃদ্ধি পায় যে, শ্বাসকষ্ট, হাঁচি-কাশি বেড়ে যায়। শ্বাসকষ্ট শুরু হয়।

২০১৪ সালের জানুয়ারি মাসে হঠাৎ একদিন রাত ৮টায় আমার শ্বাসকষ্ট এমন বেড়ে গেল যে, আমার স্ত্রী নিকটস্থ একটা ক্লিনিকে নিয়ে যায়। তখন কনকনে শীত। আমার স্ত্রী আমাকে হুইল চেয়ারে ওপরে নিতেও পারে না বা আমি নিজে হেঁটে ওপরতলায় যেতেও সক্ষম নই। ক্লিনিকের কোনো সাহায্যকারীও ছিল না যে দাঁড়িয়ে শ্বাস নিতেও পারছি না। সেখানে ওই আমাদের সাহায্য করতে পারে।

যা হোক, কোনো মতে সেখানকার জরুরি বিভাগে প্রবেশ করি। তখন দায়িত্বরত ব্যক্তি আমাকে ইনহেলার দিলেন এবং কয়েকটা ইনজেকশন পুশ করলেন। এর ফলে এক-দেড় ঘণ্টার মধ্যে আমার অবস্থা স্বাভাবিক হয়ে এলো। তখন আমাকে কিছু ট্যাবলেট ও ক্যাপসুল দেয়া হলো। সাথে কিছু বিধিনিষেধ লিখে দিয়ে ছেড়ে দেয়া হলো। হাসপাতাল ছাড়ার আগে আমি ডাক্তারকে প্রশ্ন করি- আমার সমস্যা কী ?

Shaskosto Bidai

সমস্যা ফুসফুসের। চিন্তা করবেন না, দু-তিন সপ্তাহের মধ্যে সুস্থ হয়ে যাবেন। শুধু আমার নির্দেশিত বিধিনিষেধগুলো মেনে চলবেন। যদিও এ ঘটনার পর আমার আর কোনো জটিল সমস্যা হয়নি। ২০১৫ পর্যন্ত আমার বাড়ির নিকটে ওই হাসপাতালে আমি তিনবার গিয়েছি। তারপর আমার এক শুভাকাঙ্ক্ষীর পরামর্শে একটি নার্সিং হোমের চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করি।

এটা ২০১৫ সালের ২৩ মের কথা। ওই চিকিৎসকের পরামর্শক্রমে ইনহেলার ও ওষুধ ব্যবহার করি ২০১৬-এর প্রথম পর্যন্ত। ওই হাসপাতালে কাকতালীয়ভাবে আমার এক সহকর্মীর সাথে দেখা হয়ে যায়। সেও হাঁপানি রোগী। আমার মতো ইনহেলার ও ওষুধ ব্যবহার করে পাঁচ-ছয় বছর ধরে। সে বলে, ওই চিকিৎসকের পরামর্শে আমার এখন আর কোনো সমস্যা নেই। তবে বাকি জীবন তারই অধীনে থেকে পরামর্শমতো চলতে হবে।

আমার সৌভাগ্য, ওই সহকর্মীর সাথে সাক্ষাৎ হয়। কিন্তু তার কাছ থেকে এ রোগ সম্পর্কে যেসব তথ্য পাই, তা গ্রহণ করতে পারিনি। সে আমাকে যেসব তথ্য দিলো তা আমি গ্রহণ না করে বিকল্প কিছু অনুসন্ধান করতে থাকি। শিগগিরই আমি উপলব্ধি করি আমার বুকের সব সমস্যার মূল বা উৎস হলো আদালতের মামলার জন্য সৃষ্ট উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা ও মানসিক চাপ।

আরো উপলব্ধি করি, শুধু ওষুধ হাঁপানি বা অ্যাজমা চিকিৎসা করতে পারে না। তা ছাড়া ইনহেলার, নাসারন্ধ্র পরিষ্কারকারক ফোঁটা ইত্যাদি সাময়িক স্বস্তি দেয়। এতে চিকিৎসা হয় না। আবার ওষুধের চিকিৎসা দীর্ঘমেয়াদি। অনেক চিন্তাভাবনা ও বিবেচনার পর সিদ্ধান্ত নিলাম আমাকে ওষুধমুক্ত হতে হবে। কারণ প্রত্যেক ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে। আমার মনে হলো, ইয়োগা হলো শ্রেষ্ঠ বিকল্প।

এটা সহজ, সস্তা ও অনুসরণ করা খুবই সহজ। কাজেই আমি নিজের চিকিৎসা নিজেই। শুরু করি। ইয়োগা শুরু করলাম। মনে রাখলাম বা ভেবে দেখলাম, আসলে মনোভাব, বিশ্বাস, আত্মবিশ্বাস, সহিষ্ণুতা অধ্যবসায়, সৎ সাহস, দৃঢ় মনোভাব, ইচ্ছাশক্তি, গভীর মনোযোগ, প্রতিজ্ঞা ইত্যাদি হলো একজন রোগীর দৃঢ় রোগ নিরাময়ের প্রধান শক্তি। তাই আমি ইয়োগা শুরু করি। ভাবি এটাই আমার রোগ নিরাময়ের প্রধান উপায়।

প্রথম দুই দিন উপবাস থাকি। তারপর ক্রমে ক্রমে তরল খাবার ও ফলের রস খেতে থাকি। সবশেষে সাধারণ ও স্বাভাবিক খাবার খেতে শুরু করি। গরম পানির বোতল বুকে রেখে বুক গরম রাখি যখন শ্বাসকষ্ট হয়। তার পর পদতল ও নিতম্ব গরম পানির বোতল দিয়ে গরম করি। সর্বপ্রকার দুগ্ধজাত দ্রব্য বর্জন করি। ঘুমানোর সময় কখনো মাথা ও মুখমণ্ডল কাপড় দিয়ে আবৃত রাখি না।

বিছানায় শোয়ার সময় শরীর সঠিকভাবে রাখি। আমি এখন বক্ষদেশ বিস্তৃত বা সম্প্রসারিত করার চেষ্টা করি, যাতে আমার ফুসফুস সম্প্রসারিত হয়। এর ফলে শ্বাসপ্রশ্বাস, গ্রহণ ও ত্যাগ স্বাভাবিক হবে। এক সপ্তাহ পর আমি প্রকৃত ইয়োগা শুরু করি। যেসব ইয়োগা আমাকে করতে বলা হয় সেগুলো হলো— ভুজঙ্গ আসন, ধনু আসন, উষ্ট্র আসন, কুমীরাসন, কোটি চক্রাসন, জলনেতি, নদীসাধনা ও লবণপানি গড়গড়া। এগুলো সব সকালবেলার কাজ।

Shaskosto Bidai

২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ের কথা। আমি সব ওষুধ বন্ধ করে দেই এবং ইয়োগা অনুশীলন করতে থাকি। এক মাসের মধ্যে আমি পুরোপুরি সুস্থ হয়ে যাই। কাজেই ওষুধ, ইনহেলার ও অ্যাজমা বা হাঁপানিকে বিদায় জানাই। ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বর। আমার ওই সহকর্মী আমার সাথে সাক্ষাৎ করতে আসে। জানতে আসে আমার স্বাস্থ্য সমস্যার উন্নতি ও অবনতি। আমার সাথে সে দুই দিন থাকল।

আমার সব কিছু দেখে ও শুনে বিশ্বাস করল, আমি সম্পূর্ণ সুস্থ সে তখন নিজে আমাকে অনুসরণ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। সে বিশ্বাস ওষুধেরও সর্বশ্রেষ্ঠ বিশ্বের করত পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে, অথচ ইয়োগার আসনগুলোর কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই।

২০১৬ সালের নভেম্বরের কথা। আমার সহকর্মী আমাকে জানাল বিগত দুই মাস সে সর্বপ্রকার ওষুধ বর্জন করে শুধু ইয়োগা আসন করে তার স্বাস্থ্যের আশাতীত উন্নতি হয়েছে ও হচ্ছে। আমার সহকর্মীর স্বাস্থ্যের উন্নতির কথা শুনে নিজের রোগ নিরাময়ের চেয়ে বেশি আনন্দিত হলাম।

ইবনে সিনা ট্রাস্ট এবং সাউদার্ন ইউনিভার্সিটির মধ্যে করপোরেট চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী ইউনিভার্সিটির সকল পরিচালনা পর্ষদ সদস্য, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও তাদের ডিপেনডেন্টগণ ইবনে সিনার সকল শাখা থেকে মেডিকেল সার্ভিসেস গ্রহণে বিশেষ ডিসকাউন্ট সুবিধা পাবেন।

চুক্তিপত্রে ইবনে সিনা ট্রাস্টের পক্ষে এডিশনাল ডিরেক্টর এন্ড হেড অব বিজনেস ডেভেলপমেন্ট এ এন এম তাজুল ইসলাম এবং ইউনিভার্সিটির পক্ষে প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর মো: মহিউদ্দিন স্বাক্ষর করেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন ইউনিভার্সিটির রেজিস্ট্রার ড. ইঞ্জিনিয়ার মোজাম্মেল হক, ইবনে সিনা চট্টগ্রাম শাখার এডমিন ইনচার্জ মো: মোহিবুল্লাহ, চট্টগ্রাম জোন বিজনেস ডেভেলপমেন্ট ইনচার্জ তৈয়বুর রহমান, এসিস্টেন্ট ম্যানেজার বিজনেস ডেভেলপমেন্ট রেজাউল করিম, অফিসার করপোরেট উইং সানাউল ইসলাম প্রমুখ।

Shaskosto Bidai

ভালো লাগলে কিন্তু ফেসবুক পেজ এ লাইক দিতে ভুলে জাবেন না।
আরো সাস্থ্য সম্পর্কে জানতে ভিজিট করুন.