Pusti Vora Amer Otulonio Rog Protirodh Khomota
বাংলাদেশের মওসুমি ফলের মধ্যে আম বা সর্বাপেক্ষা উল্লেখযোগ্য। জ্যৈষ্ঠ মাসে গাছে গাছে ঝুলে থাকে নানা বর্ণের হরেক রকম আম। এগুলোর হরেক নামও আছে। যেমন- হিমসাগর, দুধসাগর, গোপালভোগ, ন্যাংড়া, আম্রপালি, খিরসা, ‘জামাই আদর, ফজলি ইত্যাদি। এগুলোর স্বাদ- গন্ধও আলাদা। কোনো আম আঁশমুক্ত পেঁপের মতো। আবার কোনোটা সুগন্ধি ও আঁটি ছোট। খোসা পাতলা। বাংলাদেশের মানুষ আমকে বলে রসাল ফল। জ্যৈষ্ঠ মাসের সর্বপ্রকার ফলের মধ্যে আমকে বলে ফলের রাজা। বাংলাদেশের সর্বত্র আম হলেও রাজশাহীর আম সর্বশ্রেষ্ঠ স্বাদ ও গন্ধে। পুষ্টিমানেও শ্রেষ্ঠ। আমের পুষ্টিমান ভালো। কাঁচা ও পাকা আমের পুষ্টিগুণ আলাদা। নিম্নে ১০০ গ্রাম কাঁচা ও পাকা আমের পুষ্টিগুণ দেয়া হলো-
পুষ্টি উপাদান | কাঁচা আম | পাকা আম |
---|---|---|
আমিষ | .০৭ গ্রাম | ১.০ গ্রাম |
শ্বেতসার | ১০.০১গ্রাম | ২০.০ গ্রাম |
চর্বি | ০.০১ গ্রাম | ০.০৭ গ্রাম |
খনিজ | ০.০৪ গ্রাম | ০.০৪ গ্রাম |
ভিটামিন বি-১ | ০.০৪ গ্রাম | ০.০১ গ্রাম |
ভিটামিন বি-২ | ৬৩ গ্রাম | ৪১ গ্রাম |
ভিটামিন সি | ১০ গ্রাম | ১৬ গ্রাম |
ক্যালসিয়াম | ৫.৪ গ্রাম | ১.০৩ গ্রাম |
লৌহ | ৯০ মাইক্রো গ্রা. | ৮৩ মাইক্রো গ্রা. |
ক্যারোটিন | ০.৫ গ্রাম | ০.৫০ গ্রাম |
খাদ্যশক্তি | ৯০ গ্রাম | ৪৪ গ্রাম |
আমের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা আমাশয়ে:-
কচি আমপাতা ও জামপাতার রস (দু-তিন চা চামচ) একটু গরম করে তিন-চার দিন নিয়মিত খেলে আমাশয় সেরে যায়।
অকালে দাঁত পড়ে যাওয়ায়:
কচি আমপাতা চিবিয়ে তা দিয়ে দাঁত মাজলে অকালে দাঁত নড়েও না, পড়েও না।
দাহ ও বমিভাব দূর করতে:
তিন-চারটি পূর্ণাঙ্গ আমপাতা পানিতে সেদ্ধ করে, সেই পানি সারা দিনে একটু একটু করে সাত দিন খেলে দাহ ও বমি ভাব চলে যাবে। তবে প্রতিদিন নতুন করে আমপাতার রসের পানি করতে হবে।
পা ফাটায়:
যাদের পায়ের গোড়ালির নিচের অংশ ফেটে যায়, তাদের ফাটা শুরু হলে প্রথম থেকেই এ ফাটায় আমগাছের আঠা লাগালে ফাটা বন্ধ হবে। ওই আঠার সাথে গ্লিসারিন ব্যবহার করলে পুরনো ফাটা দূর হয়ে পা মসৃণ হবে।
পোড়া ঘায়ে:
আমপাতার পোড়া ছাই ঘিয়ে মিশিয়ে কয়েক দিন লাগালে পোড়া ঘা শুকিয়ে যায়।
নখকুনিতে:
যারা নখকুনিতে কষ্ট পান, তারা আমগাছের আঠার সাথে অল্প ধনেগুঁড়া মিশিয়ে নখের কোণে টিপে দিলে এ থেকে রেহাই পাবেন।
অকালপক্বতা (চুল পাকা):
থেঁতো করা আমের কুশি (আঁটির শাঁস) ৫-৬ গ্রাম ও শুকনো আমলকী দু-তিন টুকরো একসাথে ১০-১২ চা চামচ নিয়ে লোহার পাত্রের পানিতে ভিজিয়ে সেটি ছেঁকে নিয়ে চুলে ২০-২৫ দিন লাগালে অকালপক্কতা রোধ হবে। তিন-চার দিন পর পর ওই নিয়মে চালিয়ে যেতে হবে।
মাথার খুশকিতে:
আমের কুশি (আঁটির শাঁস) ও হরীতকী একসাথে দুধে বেটে মাথায় লাগালে (সপ্তাহখানেক) খুশকি কমে যায়। তবে সেটি ছেঁকে নিয়ে মাথায় লাগাতে হবে।
প্রদর রোগে:
বীজের (আঁটির) শাঁসের গুঁড়ো ১ চা চামচ মাত্রায় পানি দিয়ে কিছু দিন খেলে শ্বেতপ্রদর কমবে। আমের মুকুল (ফুল) চায়ের মতো করে কিছু দিন পান করলেও প্রদর সেরে যাবে।
নাক দিয়ে রক্ত পড়ায়:
আমের শাঁসের রস বা গুঁড়ো গরম পানিতে দিয়ে নস্যি (শ্বাস টেনে নেয়া) নিলে রক্ত পড়া বন্ধ হবে।
পেটের আলসার হলে:
পেটে ব্যথা, জ্বালা, অরুচি, বমি প্রভৃতি দেখা দিলে ২ চা চামচ আমপাতার রস, ২ চামচ দূর্বার রস, ১ চা চামচ নিমপাতার রস, ১ চামচ আদার রস, থানকুনিপাতার রস, ৪ চা চামচ মধু মিশিয়ে খালি পেটে প্রতিদিন ভোরে একবার এক মাস খেতে হবে।
দাস্তে (পাতলা পায়খানা):
আমগাছের ছালের ওপরের স্তর চেঁছে ফেলে দিয়ে সেই ছাল গাভীর দুধের সাথে বেটে কয়েক দিন খেলে পেটের গুড়গুড় শব্দ ও পাতলা দাস্ত বন্ধ হয়। পাঁচড়ায় : আমের আঠা নারকেল তেলে মিশিয়ে কয়েক দিন শরীরের পাঁচড়ায় ব্যবহার করলে সেরে যাবে।
ডায়রিয়া (উদরাময়) হলে:
আমের আঁটির শাঁসের ক্বাথ আদার রসসহ তিন-চারবার খেলে দ্রুত ডায়রিয়া ভালো হয়।
বহুমূত্রে:
আমের নতুন পাতা শুকিয়ে গুঁড়ো করে আধা চামচ গুঁড়ো একটু কুসুম গরম পানি খেলে দিয়ে প্রতিদিন সকাল-বিকেল ডায়াবেটিস বা বহুমূত্র রোগ নিয়ন্ত্রণে থাকে।
প্লীহা বৃদ্ধিতে:
পাকা আমের রস ৭-৮ চা চামচ এতে ২ চা চামচ মধু মিশিয়ে দুই সপ্তাহ খেলে প্লীহা বৃদ্ধি (পেরক্লিয়াস বৃদ্ধি) ও সেই সম্পর্কিত উপসর্গের উপশম হয়। প্রয়োজনে আরো কিছু দিন খেতে হবে।
Pusti Vora Amer Otulonio Rog Protirodh Khomota
ভালো লাগলে কিন্তু ফেসবুক পেজ এ লাইক দিতে ভুলে জাবেন না।
আরো সাস্থ্য সম্পর্কে জানতে ভিজিট করুন.
0 Comments